স্টাফ রিপোর্টার : সকল জল্পনা কল্পনার অবসান শেষ। উদ্বেগ উৎকণ্ঠা ও উৎসবের সংমিশ্রণে ২১ মে নারায়ণগঞ্জের তিনটি উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ভোটের লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত কার কলায় উঠবে বিজয়ের মালা— তা নিয়েই চলছে নানা আলোচনা। যদিও ওই তিন উপজেলায় ভোটের মাঠে এগিয়ে থাকা তিন চেয়ারম্যান প্রার্থীকে নিয়ে আশাবাদি স্থানীয় ভোটাররা। তারা হলেন, রূপগঞ্জ উপজেলার দোয়াত কলম প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিব, সোনারগাঁ উপজেলার ঘোড়া প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী মাহফুজুর রহমান কালাম এবং আড়াইহাজার উপজেলায় ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী সাইফুল ইসলাম স্বপন। ওই তিন উপজেলার সাধারণ ভোটারদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, উল্লেখিত প্রার্থীরা নিজ নিজ উপজেলায় বেশ জনপ্রিয়। স্থানীয় জনগণের সাথে তাদের সম্পৃক্ততা রয়েছে। সুখে—দু:খে তাদের পাশে পাওয়া যাবে বলেই ভোটের মাধ্যমে উপজেলা চেয়ারম্যান বানাতে প্রস্তুত রয়েছেন সাধারণ ভোটাররা।
আজ মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল চারটা পর্যান্ত নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ, আড়াইহাজার ও সোনারগাঁও উপজেলার বহুল আলোচিত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। দ্বিতীয় ধাপে অনুষ্ঠিত নারায়ণগঞ্জের এই তিনটি উপজেলা নির্বাচনকে ঘিরে সবচেয়ে বেশি চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে আড়াইহাজার এবং সোনারগাঁ উপজেলায়। এই দুই উপজেলার মধ্যে আবার উত্তেজনায় ঠাসা ছিলো সোনারগাঁ। প্রার্থীদের নানা মন্তব্য, প্রভাবশালীদের সমর্থন দেয়া না দেয়া এবং অভিযোগ অনুযোগের মাধ্যমেই শেষ হয়েছে নির্বাচনী প্রচার—প্রচারণা। ফলে এই উপজেলায় চেয়ারম্যান প্রার্থীদের দিকেই বাড়তি নজর রয়েছে সকলের।
সোনারগাঁয়ে চেয়ারম্যান পদে চারজন প্রার্থী ভোটের লড়াইয়ে নেমেছেন। এর মধ্যে ঘোড়া প্রতীক নিয়ে মাহফুজুর রহমান কালাম, আনারস প্রতীক নিয়ে বাবুল ওমর বাবু, দোয়াত কলম প্রতীক নিয়ে আলী হায়দার এবং মোটর সাইকেল প্রতীক নিয়ে রফিকুল ইসলাম নান্নু প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। এই চার প্রার্থীর মধ্যে আলী হায়দার এবং নান্নু নিজেদেরকে সেভাবে আলোচনায় আনতে পারেননি। আর বাবুল ওমর বাবু যতটা আলোচনায় এসেছেন, তার চেয়েও বেশি কুড়িয়েছেন সমালোচনা। তার ঔদ্ধত্যপূর্ন মন্তব্য এবং হুমকি—ধামকিতে সাধারণ ভোটারদের কাছেও নিজের ইমেজ ধরে রাখতে পারেননি। স্থানীয় এমপি কায়সার হাসনাত তাকে সমর্থন জানালেও বাবুল ওমর বাবুর বোন নিজেই তার বিরুদ্ধে ভোটের মাঠে অবস্থান নিয়েছেন এবং বাবুকে কুখ্যাত সন্ত্রাস হিসেবে আখ্যায়িত করায় সাধারণ ভোটাররাও বাবুর প্রতি আস্থা হারিয়েছেন। অন্যদিকে, জনপ্রিয়তার কারণে কালামের বিজয় নিশ্চিত দেখছেন সাধারণ ভোটাররা।
এদিকে, রূপগঞ্জ উপজেলায় দোয়াত কলম প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করা হাবিবুর রহমান হাবিবকে একজন ক্লিন ইমেজের প্রার্থী হিসেবে দেখছেন স্থানীয় ভোটাররা। বিশেষ করে, সাবেক মন্ত্রী ও রূপগঞ্জের বর্তমান এমপি গোলাম দস্তগীর গাজী (বীর প্রতীক) এবং তার পরিবারের সাথে সু—সম্পর্ক থাকায় রূপগঞ্জের সাধারণ ভোটাররা হাবিবুর রহমান হাবিবকে ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত করার জন্য ঐক্যমতে এসেছেন। ভোটাররা বলছেন, রূপগঞ্জের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হলে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে হাবিবকে নির্বাচিত করার বিকল্প নেই। তাছাড়া তিনি তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর চেয়েও অধিক যোগ্যতা সম্পন্ন ব্যক্তি। তাই এবারের উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে হাবিবুর রহমান হাবিবের বিকল্প নেই বলেও মনে করছেন ভোটাররা। এছাড়াও উপজেলা আওয়ামী লীগ এবং অঙ্গ—সংগঠনসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও হাবিবের বিজয়ের বিষয়ে শতভাগ আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। ভোটের মাঠে রূপগঞ্জে তাই এগিয়ে আছেন দোয়াত কলমের প্রার্থী হাবিব।
অন্যদিকে, আড়াইহাজার উপজেলায় ঘোড়া প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করা সাইফুল ইসলাম স্বপনকে এগিয়ে রাখছেন সাধারণ ভোটাররা। তারা বলছেন, স্বপন তরুণ প্রজন্মের প্রার্থী। এছাড়াও তার প্রতি স্থানীয় এমপির সুদৃষ্টি থাকায় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ—সংগঠন সহ উপজেলার অধিনস্থ সকল ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও ওয়ার্ডের মেম্বাররাও স্বপনের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। এতে সাধারণ ভোটাররাও স্বপনকেই আড়াইহাজারের যোগ্য প্রার্থী হিসেবে মনে করছেন। তাই ভোটাররা নির্বিঘ্নে কেন্দ্রে আসতে পারলে স্বপনের বিজয় সুনিশ্চিত বলে মন্তব্য করছেন বোদ্ধা মহল।
ফলে তিনটি উপজেলায় উল্লেখিত তিন চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিজয়ের বিষয়ে শতভাগ আশাবাদী তাদের কর্মী সমর্থকরা। ভোটাররাও বলছেন, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট হলে ওই তিন প্রার্থীর গলায় উঠবে বিজয়ের মালা।